Google search engine
Homeঅপরাধআনিসুল হকের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকল দুদক

আনিসুল হকের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকল দুদক

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ব্যাংকে বিপুল অঙ্কের টাকা লেনদেনের অভিযোগে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলাটি করেন।

এজাহারে বলা হয়, আনিসুল হক মন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা ভোগ-দখলে রেখেছেন। দুদকের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মো. আক্তার হোসেন গতকাল এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এজাহারে বলা হয়, অনুসন্ধানে আনিসুল হকের নামে ২৯ ব্যাংক হিসাবে ৩৪৯ কোটি ১৫ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য মিলেছে।

তিনি নিজ ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে গত ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে অপরাধমূলক অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। ২৯ ব্যাংক হিসাবে ৩৪৯ কোটি ১৫ লাখ ২১ হাজার ৫৮২ টাকা জমা করেন ও ৩১৬ কোটি ৪৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। এটি অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন। এজাহারে তাঁর বিরুদ্ধে দুদক আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। 

গত ৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন। 

সাবেক এমপি মোস্তাফিজুরের নামে হচ্ছে দুই মামলা

এদিকে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী শাহীন আক্তার চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুটি মামলা করবে দুদক। গতকাল তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। অনুসন্ধান কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে শিগগির মামলাটি করবেন। দুদক জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে ২৭ ব্যাংক হিসাবে প্রায় ২২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য মিলেছে। মোস্তাফিজুর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্জিত ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকা ২১ ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে উৎস গোপন করার উদ্দেশ্যে লেনদেন করেছেন। এ ছাড়া নিজ নামে ৯৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। 

তাঁর স্ত্রী শাহীন আক্তার চৌধুরী গৃহিণী হওয়ার পরও স্বামী তাঁর অপরাধলব্ধ অর্থে স্ত্রীকে ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা করেছেন। যার অংশ হিসেবে আয়কর নথিতে প্রদর্শিত করে তাঁর স্বামীর অবৈধ উপায়ে অর্জিত ৩ কোটি ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ছয়টি ব্যাংক হিসাবে লেনদেন করেছেন, যা অস্বাভাবিক। তাঁর নামে ২ কোটি ৬ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদক আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। 

সাবেক এমপি বকুলের নামেও হবে মামলা

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সাবেক এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলের বিরুদ্ধেও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হবে। গতকাল কমিশন এই মামলার অনুমোদন দিয়েছে। 

দুদকের অনুসন্ধানে তাঁর নামে ২ কোটি ২৭ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া গেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার, অপরাধমূলক অসদাচরণ, নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে ওই সম্পদ অর্জন করেছেন তিনি। 

তিনি নিজের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৮ ব্যাংক হিসাবে ২৯ কোটি ১৪ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। ব্যাংক হিসাবে ১৪ কোটি ৫৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা জমা করেছেন। উত্তোলন করেছেন ১৪ কোটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তাঁর বিরুদ্ধে দুদক আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলাটি করা হবে

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments